দেখতে দেখতে তের বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর - ওবায়দুল কাদের
বি এ রায়হান, গাজীপুরঃ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেল মানুষ খুশি, ফখরুল সাহেবের মন খারাপ। দেশের মানুষ ভাল আছে, এতে ফখরুল সাহেবের মন খারাপ হয়ে যায়। মানুষ ভাল থাকলে বিএনপির সকলের মন খারাপ হয়ে যায়। বিশেষ করে বিএনপি নেতাদের। যাদের গত তের বছরের ইতিহাস আন্দোলন আর আন্দোলন দেখতে দেখতে তের বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ, বিএনপি’র এখন পদ্মা সেতু দেখে গাত্রদাহ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দিনব্যাপী জেলা রাজবাড়ি মাঠে আয়োজিত গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, শতভাগ সততার সাথে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক অবশেষে নিজেরাই স্বীকার করেছে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে তারা ভুল করেছে। বাঙালি জাতির স্বপ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তথা সারাজাতির স্বপ্ন পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংক আমাদেরকে অপবাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হেনস্তা করেছে। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজিব ওয়াজেদ জয়, পুতুল, ববিসহ সবাইকে এই পদ্মা সেতুর জন্য হেনস্তা হতে হয়েছিল। ওবায়দুল কাদের বলেন, খড়স্রোতা প্রমত্তা পদ্মা নদীতে সেতু নির্মান ছিল আওয়ামীলীগের জন্য চ্যালেঞ্জ। দলীয় সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সে চ্যালেঞ্জে জয়ী হয়েছি। আগামী মাসেই হয়তো পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে চলাচলের অপেক্ষার অবসান হবে। খুব শীঘ্রই আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সেতু খুলে দেয়ার তারিখ জানিয়ে দিব। এখন পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করবে দেশের জনগণ। আগে যেখানে ফেরি দিয়ে পদ্মা নদী পাড় হতে দুই আড়াই ঘন্টা সময় লাগতো এখন তার পাড় হওয়া যাবে ছয় থেকে সাত মিনিটেই। শুধু পদ্মা সেতু নয় আমাদের মেগা প্রকল্পের বিআরটি প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প ও কর্নফুলী টানেল নির্মানও এখন শেষের পথে। গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের ৭৫ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা যায় আর দুর্ভোগ হবে না। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ৩০হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। শতভাগ সচ্ছতার সাথে পদ্মা সেতুর নির্মান হয়েছে। নানা ষড়যন্ত্রের পর বিশ্বব্যাংক সরে গেলেও পরে তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে। মুক্তিযোদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ গাজীপুর থেকে শুরু হওয়ায় ওবায়দুল কাদের গাজীপুরের প্রশংসা করেন। সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে দলীয় বিরোধ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্ততি নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি। তিনি বলেন, গাজীপুরে যেসব উন্নয়ন কাজ অসমাপ্ত রয়েছে চলমান কাজ গুলো অচিরেই সমাপ্ত হবে। নতুন কোন কাজ থাকলে সে কাজে নেত্রীর নির্দেশ আছে গাজীপুরের প্রতি তার বিশেষ একটা টান আছে। তিনি বলেছেন কাজ শেষ করার জন্য। আর যেগুলো বাকি আছে সেগুলো আমরা অচিরেই শুরু করবো। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গাজীপুর শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ী মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গাজীপুর জেলার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপির সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এমপির সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। আরো বক্তব্য রাখেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা সাইদ খোকন, আনোয়ার হোসেন, সাহাবউদ্দিন ফরাজী, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক সাবেক ডাকসু নেতা আখতারুজ্জামান প্রমুখ। ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বিএনপি মিথ্যাচারের রাজনীতি করে তারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে মিথ্যা কথা বলে, এগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট অসত্য তথ্য। প্রকৃত সত্য ছিল বঙ্গবন্ধুই হলেন স্বাধীনতারঘোষক, যা সে সময়কালে দেশ ও বিদেশের নানা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। বিএনপি সরকার পরিচালনা করে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি, তখন উত্তরবঙ্গের মানুষ না খেয়ে মারা যেত। আর আওয়ামীলীগের গত ১৪বছরের শাসনামলে উত্তরবঙ্গের একজন মানুষও এক বেলাও না খেয়ে থাকেনি। শেখ হাসিনার সরকার খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ অবস্থানে। চাল উৎপাদনে এখন আমরা বিশ্বে তৃতীয়। বিএনপির আমলে সারের জন্য কৃষক মারা যেত। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেই সকল প্রকার সারের দাম কমিয়েছে। আমরা কৃষকদের স্বার্থে এখন ভর্তুকি দেই হাজার হাজার কোটি টাকা। সরাসরি এখন কৃষক প্রণোদনা পায়।